প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২১ জুন ২০২৫, ১৬:২৬:০১ : চীন ইতিমধ্যেই ইন্টারনেটে যে নজরদারি জাল ছড়িয়ে দিয়েছে তা এখন আরও কঠোর হতে চলেছে। রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সরকার শীঘ্রই একটি জাতীয় ইন্টারনেট আইডি বাস্তবায়ন করতে চলেছে। একটি ডিজিটাল পরিচয়পত্র যা প্রতিটি ব্যবহারকারীর অনলাইন পরিচয়ের সাথে সংযোগ স্থাপন করবে। এর অর্থ স্পষ্ট যে এখন যদি আপনি মিথ্যা বলেন, সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু লেখেন বা আপনার পরিচয় গোপন করেন, তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টটি সরাসরি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সরকার বলছে যে এই ব্যবস্থা মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখবে এবং ডিজিটাল অর্থনীতিকে উৎসাহিত করবে। কিন্তু অনেক বিশেষজ্ঞ এই দাবী নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন এবং সতর্ক করছেন যে এটি মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তারা এই দাবী নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন এবং সতর্ক করছেন।
চীনে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট অপসারণ, অ্যাকাউন্ট স্থগিত এবং সমালোচকদের সনাক্ত করার জন্য একটি বড় সেন্সরশিপ ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু নতুন ইন্টারনেট আইডির মাধ্যমে, সরকার প্রতিটি ব্যবহারকারীর রিয়েল-টাইম পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতা পাবে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জিয়াও কিয়াং-এর মতে, এটি কেবল একটি নজরদারি হাতিয়ার নয় বরং ডিজিটাল একনায়কতন্ত্রের অবকাঠামো। এর মাধ্যমে, সরকার একযোগে সমস্ত প্ল্যাটফর্ম থেকে একজন ব্যবহারকারীকে অদৃশ্য করে দিতে পারে।
সরকার বলছে যে এই আইডি বর্তমানে "স্বেচ্ছাসেবী"। কিন্তু সমালোচকরা বিশ্বাস করেন যে এটি ধীরে ধীরে বাধ্যতামূলক করা হবে। অধ্যাপক হাওচেন সান বলেছেন যে সরকার সুবিধা দেখিয়ে মানুষকে নিজেরাই এতে যোগদান করতে বাধ্য করতে পারে। যদিও এই সিস্টেমের উদ্দেশ্য একটি নিরাপদ এবং সহজ শনাক্তকরণ ব্যবস্থা বলা হচ্ছে, তথ্য লঙ্ঘনের ঝুঁকিও অনেক বেড়েছে। ইতিমধ্যে ২০২২ সালে, চীনা পুলিশের একটি ডাটাবেস ফাঁস হয়ে গেছে, যেখানে প্রায় এক বিলিয়ন মানুষের তথ্য ছিল।
গত বছর যখন এই আইডি সিস্টেমের প্রস্তাব আসে, তখন কিছু আইন অধ্যাপক এবং মানবাধিকার সংগঠন প্রকাশ্যে এর বিরোধিতা করে। কিন্তু ধীরে ধীরে প্রতিবাদের সমস্ত কণ্ঠস্বর অদৃশ্য হয়ে যায়। মে মাসে চূড়ান্ত নিয়ম প্রকাশের সাথে সাথে অনলাইন সমালোচনা কার্যত অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের মতে, ইতিমধ্যে ৬০ লক্ষ মানুষ আইডিটি গ্রহণ করেছেন, যেখানে দেশে ১ বিলিয়নেরও বেশি অনলাইন ব্যবহারকারী রয়েছে। তবে, পরিসংখ্যানগুলি আসন্ন বিপদেরও ইঙ্গিত দেয়, কীভাবে এই 'স্বেচ্ছাসেবী' ব্যবস্থা ধীরে ধীরে বাধ্যতামূলক করা হবে।
No comments:
Post a Comment