প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ২১ জুন ২০২৫, ১৭:০৫:০১ : নির্বাচন কমিশন ভোটকেন্দ্রের ওয়েবকাস্টিং ফুটেজ জনসমক্ষে প্রকাশের দাবী প্রত্যাখ্যান করেছে। ইসি জানিয়েছে যে এটি ভোটারদের গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি। কমিশনের আধিকারিকরা শনিবার বলেছেন যে এই ধরনের দাবী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষার দাবী করতে পারে, কিন্তু তাদের আসল উদ্দেশ্য বিপরীত। জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫০-১৯৫১ এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, এই দাবী ভোটারদের অধিকার লঙ্ঘন করে। ফুটেজ শেয়ার করলে ভোটারদের পরিচয় প্রকাশ পেতে পারে, যার কারণে যারা ভোট দেন বা দেন না তারা চাপ, বৈষম্য বা ভয়ভীতির শিকার হতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনও দল কোনও বুথে কম ভোট পায়, তবে তারা সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে ভোটারদের সনাক্ত করতে পারে এবং তাদের লক্ষ্যবস্তু করতে পারে।
কমিশন ৪৫ দিনের জন্য ফুটেজ সংরক্ষণ করে, যা কেবল অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য এবং নির্বাচনী আবেদন দাখিলের সময়কালের মধ্যে। ইসি সতর্ক করে দিয়েছে যে ৪৫ দিনের বেশি ফুটেজ সংরক্ষণ করলে অপব্যবহার হতে পারে, যেমন ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া। এই সময়ের মধ্যে যদি কোনও আবেদন দাখিল করা হয়, তাহলে ফুটেজটি ধ্বংস করা হয় না এবং আদালতে উপলব্ধ করা হয়। ভোটারদের গোপনীয়তা অপরিবর্তনীয় বলে বিবেচনা করে, কমিশন কখনও এই নীতির সাথে আপস করেনি, যেমনটি সুপ্রিম কোর্টও সমর্থন করেছে।
২০২৪ সালের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বিকেল ৫টার পরে ফুটেজ প্রকাশের জন্য বিরোধী দলগুলির দাবীর জবাবে এই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, সরকার নির্বাচনের নিয়ম ৯৩ সংশোধন করে এবং জনসাধারণের পরিদর্শন থেকে সিসিটিভি এবং ওয়েবকাস্টিং ফুটেজ নিষিদ্ধ করে। ৪৫ দিনের মধ্যে ফলাফল চ্যালেঞ্জ না করা হলে ফুটেজ ধ্বংস করার জন্য কমিশন রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে। কমিশন বলেছে যে রেকর্ডিং বাধ্যতামূলক নয়, তবে এটি অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার অংশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ফুটেজ ব্যবহার করা যেতে পারে। এই পরিস্থিতি পর্যালোচনাকে প্রয়োজনীয় করে তুলেছে। কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ভোটারদের গোপনীয়তা এবং সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের এই মন্তব্য রাহুল গান্ধীর জন্য একটি ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি, তিনি ২০২৪ সালের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে স্বচ্ছতার দাবী করেছিলেন। তিনি কমিশনকে সাম্প্রতিক লোকসভা এবং সমস্ত রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ডিজিটাল, মেশিন-পঠনযোগ্য ভোটার তালিকা এবং মহারাষ্ট্রের ভোটকেন্দ্র থেকে বিকেল ৫টার পরে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। রাহুল দাবী করেছিলেন যে ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার যুক্ত করা হয়েছে এবং ভোটদানের শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে, যাকে তিনি ম্যাচ ফিক্সিং বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছিলেন যে এটি গণতন্ত্রের জন্য বিষ এবং কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য সত্য কথা বলা জরুরি।
No comments:
Post a Comment