প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২৬ জুন ২০২৫, ১০:০০:০১ : ভারতে অনেক সুন্দর ও পুরাতন দুর্গ রয়েছে যা এখনও আমাদের ইতিহাস এবং সাহসিকতার গল্প বলে। রাজারা তাদের সাম্রাজ্য রক্ষার জন্য এই দুর্গগুলি তৈরি করেছিলেন। রহস্য এবং শক্তিতে ভরা এমন একটি দুর্গ মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলার মুরুদ গ্রামের কাছে অবস্থিত। এর নাম মুরুদ-জাঞ্জিরা দুর্গ। এই দুর্গটি বিশেষ কারণ এটি স্থলে নয়, বরং সমুদ্রের মাঝখানে অবস্থিত এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৯০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। এই দুর্গটি কেবল তার কাঠামোর জন্যই বিখ্যাত নয়, বরং এটি আজ পর্যন্ত কেউ জয় করতে পারেনি বলেও পরিচিত।
ইতিহাস সাক্ষী যে অনেক শক্তিশালী শাসক এই দুর্গটি দখল করার চেষ্টা করেছিলেন। যেমন - মুঘল থেকে মারাঠা, ব্রিটিশ থেকে পর্তুগিজ, কিন্তু কেউই সফল হতে পারেননি। এমনকি ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ, তাঁর পুত্র সম্ভাজি মহারাজ এবং মারাঠা নৌবাহিনীর সাহসী কানহোজি আংরের মতো যোদ্ধারাও এই দুর্গটি জয় করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হন।
এই দুর্গের কাঠামোই এর সবচেয়ে বড় শক্তি। এর প্রধান দরজাটি এমন কোণে নির্মিত যে অল্প দূরে গেলেও এটি দেখা যায় না। কাছে আসার পরেও শত্রুরা বিভ্রান্ত হয়ে যেত। এর পাশাপাশি, ৪০ ফুট উঁচু শক্তিশালী পাথরের দেওয়াল দুর্গটিকে অজেয় করে তোলে। আজও, সিদ্দি শাসকদের বড় বড় কামান দুর্গে রয়েছে যা একসময় নিরাপত্তার জন্য ব্যবহৃত হত।
মুরুদ-জাঞ্জিরা দুর্গের নির্মাণ কাজ পঞ্চদশ শতাব্দীতে আহমেদনগর সালতানাতের মন্ত্রী মালিক আম্বরের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছিল এবং এটি তৈরি করতে প্রায় ২২ বছর সময় লেগেছিল। এই দুর্গটি প্রায় ২২ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত এবং এতে ২২টি নিরাপত্তা পোস্ট রয়েছে। এটি স্থাপত্য এবং নিরাপত্তা কৌশলের একটি চমৎকার উদাহরণ হিসাবে বিবেচিত হয়।
এই দুর্গের সবচেয়ে বড় রহস্যময় বিষয় হল এটি সম্পূর্ণরূপে সমুদ্রের লবণাক্ত জল দ্বারা বেষ্টিত, কিন্তু এর ভেতরে একটি মিঠা জলের হ্রদ রয়েছে। আজ পর্যন্ত কেউ বুঝতে পারেনি যে এই হ্রদে মিঠা জল কোথা থেকে আসে। অনেক ভূতাত্ত্বিক এই বিষয়ে গবেষণা করেছেন, কিন্তু এর স্পষ্ট উত্তর খুঁজে পাননি। এই হ্রদটি এখনও এই দুর্গের সবচেয়ে রহস্যময় এবং আশ্চর্যজনক জিনিসগুলির মধ্যে একটি।
No comments:
Post a Comment