লাইফস্টাইল ডেস্ক, ১৬ জুন ২০২৫: গ্রীষ্মকালে জাম প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এটি ঔষধি গুণে ভরপুর এবং অনেক রোগ থেকে রক্ষা করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মজবুত করার পাশাপাশি জাম খাওয়ার অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। এটি কেবল শরীরে রক্তের ঘাটতি পূরণ করে না, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্যও সেরা ওষুধ। জামের বীজ এবং পাতা অনেক রোগ থেকে রক্ষা করে। একদিকে এগুলি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, অন্যদিকে কখনও কখনও এগুলি ক্ষতিকারকও প্রমাণিত হতে পারে।
জামের উপকারিতা জানার পর, অনেকেই অতিরিক্ত পরিমাণে জাম খাওয়া শুরু করেন। কিন্তু এটা করা বিপজ্জনক হতে পারে। আয়ুর্বেদ অনুসারে, যেকোনও জিনিসই স্বল্প পরিমাণে খাওয়া উচিৎ। অনেক সময় অতিরিক্ত খেলে অন্যান্য অনেক রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জেনে নিন অতিরিক্ত জাম খেলে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন-
১. হাইপোগ্লাইসেমিয়া
জাম রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত কমে যেতে পারে, ফলে দুর্বলতা, মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২. হজমজনিত সমস্যা
জামে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা অতিরিক্ত খেলে গ্যাস, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া হতে পারে।
৩. দাঁতের ক্ষতি
জামে প্রাকৃতিক চিনি ও অ্যাসিড থাকে, যা অতিরিক্ত খেলে দাঁতের এনামেল ক্ষয় হতে পারে এবং দাঁতে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটতে পারে।
৪. রক্তচাপ কমে যাওয়া
জামে হাইপোটেনসিভ (রক্তচাপ কমানোর) প্রভাব রয়েছে। অতিরিক্ত খেলে রক্তচাপ অতিরিক্ত কমে যেতে পারে, ফলে মাথা ঘোরা বা বমি হতে পারে।
৫. কিডনি পাথর
জামে অক্সালেট থাকে, যা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ক্যালসিয়ামের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে কিডনি পাথর তৈরি করতে পারে।
৬. অ্যালার্জি
কিছু মানুষের জামে অ্যালার্জি থাকতে পারে, যার ফলে চুলকানি, ফুসকুড়ি বা ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৭. গর্ভাবস্থায় সাবধানতা
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য জাম খাওয়া সাধারণত নিরাপদ হলেও, অতিরিক্ত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে, যা হাইপোগ্লাইসেমিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
৮. ব্রণ
অতিরিক্ত জাম খাওয়া আপনার ত্বকের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। এর ফলে ব্রণও হতে পারে।
পরামর্শ: দুধের সঙ্গে খাওয়া এড়িয়ে চলুন-
জাম খাওয়ার পর দুধ খেলে হজমজনিত সমস্যা হতে পারে।
প্রতিদিন ১০০ গ্রাম জাম খাওয়া নিরাপদ বলে মনে করা হয়।
খালি পেটে বা দুধ খাওয়ার পর জাম খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
গর্ভাবস্থায় বা ডায়াবেটিস থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে জাম খাওয়া উচিৎ।
জাম খাওয়ার পর মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন বা জল পান করুন।
সাধারণভাবে, জাম একটি পুষ্টিকর ফল, তবে অতিরিক্ত খেলে উপরের সমস্যাগুলি দেখা দিতে পারে।
No comments:
Post a Comment